কক্সবাজার প্রতিনিধি: অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার ঘটনা তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল, সেই কমিটির প্রতিবেদন কাল সোমবার মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার সব কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার কক্সবাজার হিলটাউন সার্কিট হাউসে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান।
তিনি জানান, ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে তারা এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মোট ৬৮ জনের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাদের বক্তব্য গ্রহণ করেছেন। তাদের বক্তব্য এবং প্রাপ্ত তথ্য ও উপাত্ত যাচাই-বাছাই করে ৮০ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে সে ব্যাপারে করণীয় একটি সুপারিশমালাও প্রণয়ন করা হয়েছে। এ দুটো প্রতিবেদনই কাল সোমবার জমা দেওয়া হবে।
মিজানুর রহমান জানান, সিনহার মৃত্যুর ঘটনাটি কেন ঘটেছে এবং এর জন্য কারা দায়ী- তা প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে। অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আমাদের কমিটির তদন্ত কার্যক্রমের বাইরেও এ ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তদন্ত কর্মকর্তারা প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এখন আদালতই নির্ধারণ করবেন, ওই হত্যার ঘটনার জন্য কারা দায়ী। সেসঙ্গে তাদের কী শাস্তি হবে সেটাও আদালতের এখতিয়ার।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লে. কর্নেল এসএম সাজ্জাদ হোসেন, পুলিশ বাহিনীর প্রতিনিধি অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক জাকির হোসেন খান এবং কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাজাহান আলী। প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফে মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়ার চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ।
হত্যার পর গত ২ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ কমিটি গঠন করা হয়। গত ৩ আগস্ট এ কমিটি তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ৭ কর্মদিবস তথা ১০ আগস্ট কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়। কিন্তু সে অনুযায়ী তদন্ত সম্পন্ন না হওয়ায় কমিটির পক্ষ থেকে সময়ের আবেদন করলে তা বাড়িয়ে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু তদন্ত শেষ করতে না পারায় দ্বিতীয় দফা সময় বাড়ানোর আবেদন করে কমিটি। এর প্রেক্ষিতে আবারও সময় বাড়িয়ে ৩১ আগস্ট করা হয়। তবে মামলার অন্যতম প্রধান আসামি টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ টানা রিমান্ডে থাকায় তার বক্তব্য গ্রহণ করতে না পারায় ওই সময়ের মধ্যেও প্রতিবেদন দিতে পারেনি কমিটি। পরে প্রতিবেদন দাখিলের সময় তৃতীয়বারের মতো বাড়িয়ে ৭ সেপ্টেম্বর করা হয়। এর মধ্যে গত ২ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার জেলা কারাগারে প্রদীপ কুমার দাশের বক্তব্য গ্রহণ করেছে কমিটি।